কাল বছরের প্রথম বৃষ্টিতে ভিজলাম আমি

in আমার বাংলা ব্লগ6 months ago

leaf-1001679_1280.jpg

Copyright Free Image Source:PixaBay


গতকাল দুপুরের দিকে হঠাৎ আকাশ অন্ধকার করে এলো । দিন দুপুরে চারিদিকে যেন আঁধার নেমে এলো । হাওয়া বন্ধ, থমথমে কালো আকাশ, একটা ভয়ঙ্কর তুফানের পূর্বাভাস । দেখতে দেখতে খুব দ্রুত পরিবেশ পাল্টাতে লাগলো । দমকা হাওয়া বইতে শুরু করলো হঠাৎ, আর তারই সঙ্গে আকাশ আরো কালো হয়ে এলো । ক্ষণপরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়তে লাগলো । সেই সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়তে লাগলো বাতাসের বেগ ।

আমি একটুখানি ব্যালকনিতে গিয়ে দাঁড়ালুম । হঠাৎ, কালো আকাশের বুক চিরে বিদ্যুতের শিখা ঝলসে উঠলো । আকাশের এ মাথা থেকে ও মাথা অব্দি ঘন ঘন মুহুর্মুহু বিদ্যুৎ চমকাতে লাগলো । আর তারই সাথে কানফাটা মেঘের গর্জনে বুক দুরু দুরু করে ওঠে ।

প্রথমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছিলো, ক্রমে বৃষ্টির বেগ বাড়লো । দেখতে দেখতে বড় বড় ফোঁটায় বৃষ্টি পড়া শুরু হলো । আমি ব্যালকনি থেকে হাত বাড়িয়ে দিলুম বাইরে । আহ ! কী ঠান্ডা ! বৃষ্টির শীতল জলের স্পর্শ বড্ড ভালো লাগলো আমার ।

ক্রমে কিন্তু হাওয়ার বেগ বাড়তে লাগলো, আর একটা সময় পর সেটা ঝড়ে রূপান্তরিত হলো । অবিশ্বাস্য তার বেগ । কালবৈশাখী । ঝড়ের ঝাপটে বৃষ্টির ফোঁটাগুলো প্রায় উড়িয়ে নিয়ে যেতে লাগলো । তীব্র বৃষ্টির জলের ছাঁটে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে থাকা এক প্রকার অসম্ভব হয়ে পড়লো । ওরে বাবা সে কী ঝড় ! ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে ঝড়ের ধাক্কায় উল্টে পড়ি আর কী ! অসম্ভব তীব্র হাওয়ার বেগ । দূরে দেখতে পাচ্ছিলাম নারিকেল আর সুপারি গাছগুলোর মাথা কালবৈশাখীর তীব্র অভিঘাতে মাতালের মতো দুলছে।

ব্যালকনিতে আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না । ঘরে ঢুকে গেলুম । জানালার কাঁচের উপর বৃষ্টির ফোঁটাগুলো স্রেফ উড়ে এসে তীব্র গতিতে আঘাত করতে লাগলো । কাঁচ বেয়ে জলের স্রোত বইতে লাগলো, বাইরের দিকে ঝাপসা দৃষ্টি ।

প্রায় চল্লিশ মিনিট ধরে ঝড়ের মাতম চললো । আর সেই সাথে মুষল ধারে বৃষ্টি । ঘন ঘন বাজ পড়তে লাগলো, কাঁচের শার্শিতে বিদ্যুতের ঝলকানিতে চোখ ধাঁধিয়ে যায় ।

এক ঘন্টা পরে বৃষ্টি আর হাওয়ার বেগ পড়ে গেলো । টিপ টিপ করে বর্ষা পড়ছে দেখে ভাবলুম যাই ছাদে গিয়ে একটু ভিজে আসি । যেই ভাবা সেই কাজ । ছাদে চলে গেলুম । আঃ সে কী অদ্ভুত শান্তি ! বরফ শীতল বৃষ্টির ফোঁটা গায়ে মেখে দারুন এক প্রশান্তি অনুভব করলাম । এখন আর তত বৃষ্টি পড়ছে না, তবে মাঝে মাঝে হঠাৎ এক পশলা করে বৃষ্টি এসে একদম নাইয়ে দিচ্ছে । বৃষ্টির জল অবিরত বেয়ে পড়ছে আমার মাথার চুল বেয়ে, চিবুক বেয়ে । চোখের পাতা ভিজছে, ঠোঁট ভিজছে । আঃ ! সে কী এক অদ্ভুত প্রশান্তি তা বলে বোঝাতে পারবো না ।

ছাদের ফুলের গাছগুলো বর্ষার নবধারায় সিক্ত হয়ে হওয়ার দাপটে নাচছে যেন । আমাদের বাড়ির সামনের মাঠে বাচ্চারা কাদা মাটিতে ফুটবল খেলছে আর উল্লাস করছে । আশেপাশের প্রায় সব বিল্ডিঙের ছাদে দেখলাম অনেকেই আমার মতো বৃষ্টিতে ভিজতে এসেছে ।

প্রায় চল্লিশ-পঞ্চাশ মিনিট একটানা বৃষ্টিতে ভিজে প্রশান্ত হৃদয়ে ঘরে চলে এলুম । দারুন একটা দুপুর কাটলো আমার ।


------- ধন্যবাদ -------


পরিশিষ্ট


এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তো যে কোনো এমাউন্ট এর টিপস আনন্দের সহিত গ্রহণীয়

Account QR Code

TTXKunVJb12nkBRwPBq2PZ9787ikEQDQTx (1).png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


steempro....gif

»»——⍟——««

Sort:  

Congratulations, your post has been upvoted by @nixiee with a 100 % upvote Vote may not be displayed on Steemit due to the current Steemit API issue, but there is a normal upvote record in the blockchain data, so don't worry.

I Love your efforts and willingness to support 💚

 6 months ago 

আহা, দাদা আপনার বৃষ্টিতে ভেজার কথা শুনে তো আমারো এখন ভিজতে খুব ইচ্ছা করতেছে। কিন্তু, কি করবো বলেন, ঢাকায় থাকলে বাড়িওয়ালা ছাদ ব্যবহার করতে দেয় না। যার কারণে, বৃষ্টি এলেও আর ইচ্ছা থাকলেও ভেজা হয় না তেমন। এই কয়েকদিনে ঢাকায় অনেক বৃষ্টি হলো। কিন্তু, একদিন ও ভিজতে পারলাম না।

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

This is a nice post you have made Dada, but I think the first rain after a dry climate is not always nice because it contains some dirts.

It is a great thing that you did not allow the rain to fall on you, thanks for sharing this with us 😊❤️❤️❤️

 6 months ago 

আসলেই তো দারুন একটা দুপুর কাটিয়েছেন দাদা। বছরের প্রথম কালবৈশাখী ঝড় হলো আপনাদের ওদিকে। আমাদের এদিকেও কয়েকদিন আগে এরকম ঝড় হলো। ঝড়ের আগে যেই বাতাসটা বয় সেটা শরীর ঠান্ডা করার জন্য যথেষ্ট। ঝড় হওয়ার পর আপনি বেশ অনেকক্ষণ বৃষ্টিতে ভিজেছেন তাহলে। তবে ঝড় হলে বৃষ্টিতে ভিজতে ভয় লাগে। অবশেষে বৃষ্টিতে ভিজে শরীর মন সব কিছু প্রশান্ত হয়েছে নিশ্চয়ই।

মহান উত্তর আমি আপনাকে আমার পোস্টগুলি দেখার জন্য আমন্ত্রণ জানাই। আপনার একটি চমৎকার দিন আছে আশা করি.

 6 months ago 

এবছর প্রথম বৃষ্টিতে ভেজার দারুণ অনুভূতি শেয়ার করেছেন দাদা। বৃষ্টিতে ভেজার প্রশান্তিময় অনুভূতি প্রকাশ, শৈল্পিক লিখনির মাধ্যমে সবাই করতে পারেনা! কেউ কেউ পারেন, তার মধ্যে আপনি অন্যতম। অনেক ভালো লেগেছে আপনার লেখা। এক বৃষ্টি ভেজার ঘটনায় আকাশ-বাতাস,প্রকৃতি ও পারিপার্শ্বিকতা কোন কিছুই বাদ যায়নি। এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেললাম দাদা। বৃষ্টিতে ভেজার অসাধারণ অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। শুভ কামনা আপনার জন্য।

মহান উত্তর আমি আপনাকে আমার পোস্টগুলি দেখার জন্য আমন্ত্রণ জানাই। আপনার একটি চমৎকার দিন আছে আশা করি.

 6 months ago 

আহারে বৃষ্টিতে ভেজা আমারও অনেক পছন্দের ছিল। কিন্তু এদেশে সব সময়ই ঠান্ডা থাকে, আর বৃষ্টির পানি আরো বেশি ঠান্ডা। আপনার এনজয় করা মুহূর্তগুলো আমার ছোটবেলার কথা মনে করিয়ে দিল।

 6 months ago 

দাদা আপনার পোষ্ট দেখে খুবই খুশি হলাম। আপনার পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম প্রচার প্রথম বৃষ্টিতে ভিজেছেন বিষয়টা খুবই দারুণ। দাদা আপনি দেখছি বৃষ্টিতে ছাদে গিয়ে ভিজেছেন এবং দারুন একটা মুহূর্ত উপভোগ করেছেন সাথে ছাদে যে ফুলগুলো ছিল সেগুলো বৃষ্টির পানিতে আরো সতেজ হয়ে উঠেছে। খুবই ভালো লাগলো যে, বৃষ্টিতে তাহলে দারুন একটা মন্তব্য করেছেন এবং এটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

মহান উত্তর আমি আপনাকে আমার পোস্টগুলি দেখার জন্য আমন্ত্রণ জানাই। আপনার একটি চমৎকার দিন আছে আশা করি.

 6 months ago 

দাদা, খুব ভালো করেছেন বৃষ্টির শীতলতার স্পর্শ গায়ে মেখে! এমন অনুভূতি অনেকদিন হলো নেয়া হয় না। তবে আপনি যেভাবে ব্যাখ্যা বৃষ্টিতে ভেজার লোভ জন্মে গেল মনে! খুব ইচ্ছে করছেন একদিন না হয় বৃষ্টিতে ভিজি! আপনার অনুভূতি পড়ে বেশ ভালো লাগলো দাদা 🌸।

 6 months ago 

সুযোগ পেলেই আমি ভিজি। এরকম দুপুর বেলা বন্ধের দিন হলে ভিজতে চলে যাই সে এক অন্যরকম ভালোলাগা। আপনার লেখা পড়ে সেই ফিল পাচ্ছিলাম। দারুন দাদা।