ওয়েব সিরিজ রিভিউ: জাতিস্মর- দ্যা কনফেশন ( পর্ব ৫ )

in আমার বাংলা ব্লগlast year
হ্যালো বন্ধুরা, সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।

আজকে আপনাদের সাথে 'জাতিস্মর' ওয়েব সিরিজটির পঞ্চম পর্ব রিভিউ দেব। এই পর্বের নাম হলো "দ্যা কনফেশন"। গত পর্বে লাস্ট দেখা গিয়েছিলো বাড়ির গার্ড সনাতন যে রূপকথা নামক মেয়েটিকে শৈশবে মেরে ফেলেছিলো সেটি স্বীকার করে ফেলে। আজকে তার পরের থেকে দেখবো কি হয়।


স্ক্রিনশর্ট: ইউটিউব


✠কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য:✠

সিরিজটির নাম
জাতিস্মর
প্লাটফর্ম
hoichoi
সিজন
পর্ব
দ্যা কনফেশন
পরিচালকের নাম
সানি ঘোষ রায়
অভিনয়
মধুমিতা সরকার, রোহান ভট্টাচার্য, কৌশিক চক্রবর্তী, বিদীপ্তা চক্রবর্তী, অনন্যা সেনগুপ্ত, মনোজ ওঝা ইত্যাদি
মুক্তির তারিখ
২১ এপ্রিল ২০২৩ ( ইন্ডিয়া )
সময়
১৯ মিনিট ( পঞ্চম পর্ব )
মূল ভাষা
বাংলা
কান্ট্রি অফ অরিজিন
ইন্ডিয়া


☬মূল কাহিনী:☬


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

বাড়ির গার্ড সনাতন অরণির কাকা আর কাকিমার সামনে তো বলেই ফেলেছিলো যে সে মেয়েটাকে মেরে ফেলেছিলো কিন্তু পরোক্ষনে আবার সে বলে যে সে তাকে মারে নি। সে বার বার করজোরে বলতে থাকে যে সে তাকে মারেনি কিন্তু তারা বিশ্বাস করতে চায় না। তবে কেউ একজন মেরেছে সেটা তার কথার ভাব দেখে বুঝতে পারে কিন্তু সে বলতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়। কারণ সে যে বাড়ির নুন খেয়েছে এতো বছর ধরে, সেখানে বেইমানি করতে পারবে না। এর অর্থ পুরোপুরি অরণির কাকীর কাছে পরিষ্কার হয়ে যায় যে এই বাড়িরই কেউ একজন তাকে মেরেছিলো। এরপর তার কাকিমা কিছুটা পিছনের বিষয়গুলো মনে করতে থাকে অর্থাৎ রূপকথা যখন হারিয়ে গিয়েছিলো, তখন তার বাবা অরণির বাবা আর কাকার কাছে এসে বলেছিলো কিছু করতে আর খোঁজখবর লাগাতে কিন্তু অরণির কাকা রেগে গিয়ে তাকে বের করে দেয়। এই রূপকথার বাবা আবার তাদের কোম্পানিতে একজন স্টাফ ছিল, তবে তাদের সাথে বেশ ভালোই বন্ধুত্ব ছিল ।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

এরপর এইসব বিষয় মনে করে সন্দেহ হতে থাকে বাড়ির লোকজন, বিশেষ করে অরণির কাকার প্রতি, যে এরাই কিছু একটা করেছে এবং লুকাচ্ছে পুরো বিষয়টা। এরপর তাদের বাড়িতে যে গুরু মা এসেছিলো সে অরনীকে ডেকে তার আর রূপকথার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে থাকে অর্থাৎ তাদের কিভাবে পরিচয় হলো, কতদিনের কি পরিচয় এই আর কি। এরপর তাদের বিয়ে নিয়ে কথা বলে আর সম্মতিও দিয়ে দেয়, কিন্তু তার বাবা, মা এই বিষয়ে অখুশি, কারণ এইরকম একটা অসুস্থ মেয়ের সাথে কিভাবে বিয়ে দেওয়া যায়। তবে তাদের গুরু মায়ের কথা আবার ফেলতে পারে না, ফলে মেনে নেওয়া ছাড়া তাদের উপায় নেই। রূপকথা এদিকে একদিন ছাদে উঠে পাঁচিলের উপর দিয়ে হাটতে থাকে যেটা দেখে সবাই আরো ভয় পেয়ে যায়, যে এতো সরু জায়গা দিয়ে হাটছে, যদি পড়ে যায়। বাইরে দুটো পুলিশ অফিসার দাঁড়িয়ে ছিল, তারাও উপরে উঠে আসে। এরপর গুরু মা গিয়ে তাকে নামিয়ে আনে। তবে এখানে সনাতন এর ওয়াইফ এর গলায় একটা চেন বা হার দেখতে পায় আর সেইটা দেখে অদ্ভুত ভাবে তার গলার সেই চেন ধরে টানাটানি করতে লাগে আর বলে যে এটা ওরই চেন ছিল।


স্ক্রিনশর্ট: hoichoi

যাইহোক, এরপর আবারো অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়। এরপর বাড়িতে গুরু মা পুজোর আয়োজন করে, এবং অরণীর বাবা অস্থির হতে লাগে একভাবে পুরানো স্মৃতি ভেবে ভেবে। এখানে আসলে একদিন রূপকথার বাবা, মা আর রূপকথা যখন শৈশবে তখন তাদের বাড়িতে এসেছিলো অর্থাৎ সেই পিকনিকের সময়ে আর কি । এরপর বাড়িতে কিছু দামি দামি মূর্তি রাখা ছিল, যেগুলো বাইরের দেশের থেকে অনেক দাম দিয়ে কেনা ছিল। আর তাতে হাত দিতে সবাইকে মানা করেছিল, কিন্তু রূপকথার সেই সময় খুবই আগ্রহ ছিল, এই মূর্তিগুলোকে স্পর্শ করা। কিন্তু সাফ মানা করে দিয়েছিলো অরণীর বাবা। এরপর একদিন রূপকথা সেই মূর্তিগুলোকে দেখতে গিয়ে ভেঙে ফেলে, আর অরণীর বাবা অসম্ভব পরিমানে রেগে যায় এইটা দেখে। এতটাই রেগে যায় যে সে দিক বিদিক,সব হারিয়ে ফেলে যে সে একটা ছোট বাচ্চা খেলতে গিয়ে ভাঙতেই পারে। কিন্তু তাকে খুবই মারধর করে এবং শেষ পর্যন্ত রাগের মাথায় ভুল করে তার মুখ চেপে ধরতে গিয়ে নাকও এমন জোরে চেপে ধরেছিলো যে সে আর নিঃশ্বাস না নিতে পেরে মারা যায় আর সেখানে উপস্থিত ছিল সনাতন, যে এই বিষয়ে সব কিছু জানে।


☬ব্যক্তিগত মতামত:☬

এই পর্বে এসে বিষয়টা আরো পুরোপুরিভাবে ক্লিয়ার হলো যে সনাতন না বরং অরণীর বাবাই মেয়েটাকে মেরে ফেলেছিলো। তবে এটা অনিচ্ছাকৃত বলা যায়, কারণ ইচ্ছা করেই মারতে চায়নি, আসলে রাগের মাথায় ঘটে গেছে বিপদ আর তারপরে মদ্যপান করে ওইদিন আরো মাতাল অবস্থায় ছিল । তবে যাইহোক, এটা ইচ্ছাকৃত হোক আর অনিচ্ছাকৃত হোক, তার হাত দিয়েই তো মার্ডার হয়েছে। আর এই বিষয়টা সম্পূর্ণ সনাতন এর সামনে হয়েছিল, আর বাড়ির কেউ জানে না এই বিষয়ে যে সেদিন কি হয়েছিল। পরে সনাতনকে দিয়েই মেয়েটার লাশ মন্দিরের এক কোনে পুঁতে দিয়ে এসেছিলো। এই জন্য একটা কথা বলে যে পাপ বাপকেও ছাড়ে না। সে ২০ বছর আগে পাপ করলেও একদিন না একদিন তার ফল ভোগ করতে হবেই। এখন অরণীর বাবার এমন অবস্থা হয়েছে যে সে আর স্বস্তি পাচ্ছে না, তার ভিতরে যেন এই বিষয়টা একভাবে এখন কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। আর এখন রূপকথাই সেই মেয়ে কিনা আর সে জাতিস্মর হয়ে ফিরে এসেছে কিনা সেইটা প্রমাণিত হওয়ার পালা।


☬ব্যক্তিগত রেটিং:☬
৮.৮/১০


☬ট্রেইলার লিঙ্ক:☬


শুভেচ্ছান্তে, @winkles


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

 last year 

দাদা, দেখতে দেখতে জাতিস্বর ওয়েব সিরিজটির পঞ্চম পর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে। তবে আমার কাছে পঞ্চম পর্ব পড়ে খুব ভালো লেগেছে। এই পর্বে আরো অনেক কিছু খোলসা হয়ে পড়েছে। এবার বুঝতে পারলাম আসলে সেই সনাতন ছোট মেয়েটাকে মারেনি, বরং অরণীর বাবা ভুলবশত রাগের মাথায় মেরে ফেলেছিল। ছোট বাচ্চারা খেলাধুলা করার সময় অনেক কিছুই ভেঙে ফেলে, এর ফলে এত রাগ করার কিছুই তো আমি বুঝলাম না। রূপকথার আচার-আচরণ দেখেই বোঝা যাচ্ছে সেই ছোট্ট মেয়েটা ছিল রূপকথা। হয়তো তার গলায় থাকা চেন টা সনাতনের ওয়াইফকে সনাতন দিয়েছিল। যার জন্য রূপকথা সেই চেনটা দেখার পরে বুঝতে পেরেছিল, এটা আসলে তার চেন। অর্থাৎ সেই ছোট্ট মেয়েটার চেন। পরবর্তী পর্বে কি হবে তা জানার অনেক বেশি আগ্রহ জেগেছে আমার মনে। সেই পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকলাম দাদা।

 last year 

দাদা, জাতিস্মর মুভিটির যত পর্ব পড়ছি তত পর্বই পড়তে ভালো লাগছে। প্রত্যেকটা পর্বের মাধ্যমে কিছু কিছু বিষয় বাহিরে বের হয়ে আসছে, এই বিষয়টা কিন্তু অনেক বেশি ভালো লাগতেছে। অরনীর বাবা রাগের মাথায় সেই ছোট্ট মেয়েটাকে মেরে ফেলেছিল, কিন্তু এটা সনাতন ছাড়া বাড়ির কেউই জানতো না। অনিচ্ছাকৃত হলেও মেয়েটাকে তো তিনি মেরেছিলেন যার জন্য তিনি দোষী। তবে এর আগের পর্বগুলোতে তো আমি ভেবে নিয়েছিলাম সনাতনই সেই ছোট্ট মেয়েটাকে মেরে ফেলেছিল। গুরু মা এখন বলেছে অরনীর সাথে রূপকথাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য। যদিও অরণীর পরিবার এটা মন থেকে মেনে নিতে পারেনি, কিন্তু গুরু মায়ের কথা যেহেতু ফেলতে পারেনা তাই রাজি হয়েছে। জাতিস্মর হয়ে কি সেই ছোট্ট মেয়েটা ফিরে এসেছে অর্থাৎ রূপকথা কি সেই ছোট্ট মেয়েটা, এটা প্রমাণিত হবে পরবর্তী পর্বগুলোতে। আশা করছি পরবর্তী পর্বে তা ভালোভাবে জানতে পারবো দাদা। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি পরবর্তী পর্ব নিয়ে আমাদের মাঝে হাজির হবেন দাদা।

 last year 

জাতিস্মর' ওয়েব সিরিজটির পঞ্চম পর্ব রিভিউ পড়ে অনেক ভালো লাগলো দাদা। আরো নতুন নতুন তথ্য সামনে চলে এলো। "দ্যা কনফেশন" নামক এই পর্বের মাধ্যমে আরো অনেক কিছু জানতে পারলাম। আমি তো প্রথমে ভেবেছিলাম সেই গার্ড ছোট্ট মেয়েটিকে মেরে ফেলেছিল। কিন্তু এখন তো দেখছি পুরো ঘটনা একেবারে আলাদা। গত পর্বে আমরা দেখেছিলাম গার্ড সবকিছু স্বীকার করেছে। কিন্তু এই পর্ব পড়ে বুঝতে পারলাম আসলে গার্ড তার মালিকের কথায় সবকিছু করতে বাধ্য হয়েছে। অরণীর বাবাই মেয়েটাকে মেরে ফেলেছিল। হয়তো তিনি মাতাল হয়ে ভুল করে এই কাজটি করেছিলেন। কিন্তু সবকিছু ধামাচাপা দেওয়ার জন্য সেই গার্ডকে ব্যবহার করেছেন তিনি। আর মেয়েটিকে পুঁতে ফেলা হয়। কিন্তু অরণীর বাবা কিছুতেই শান্তি পাচ্ছিল না। মনের মাঝে সেই পাপ লুকিয়ে ছিল। আর সেই পাপ তাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল এবং কষ্ট দিচ্ছিল। এবার সেই ছোট্ট মেয়েটি আবারো ফিরে এসেছে কিনা এটা সবার মনেই সন্দেহ হচ্ছে। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম দাদা। আশা করছি পরবর্তী পর্বে নতুন কিছু জানতে পারবো।

 last year (edited)

দাদা এই পর্বে একটি বিষয় খুব সুন্দর ভাবে ফুটে উঠেছে। পাপ তার বাপকেও ছাড়ে না। ২০ বছর আগে পাপ করলেও একদিন না একদিন তার ফল ভোগ করতে হবেই। অরণীর বাবাই মেয়েটাকে মেরে ফেলেছিলো। এটা ইচ্ছাকৃত হোক আর অনিচ্ছাকৃত হোক, তার হাত দিয়েই তো মার্ডার হয়েছে। এখন অরণীর বাবার এমন অবস্থা হয়েছে যে সে আর স্বস্তি পাচ্ছে না, তার ভিতরে যেন এই বিষয়টা একভাবে এখন কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে। এখন সেই মেয়ে কিনা আর সে জাতিস্মর হয়ে ফিরে এসেছে কিনা সেইটা দেখার আশায় রইলাম। ধন্যবাদ দাদা।

 last year (edited)

দাদা আজকের পর্বটা পড়ে তো একদম অবাক হয়ে গেলাম। আসলে শুরু থেকে যখন গল্পটা পড়ছিলাম মনে হচ্ছিল ওই কাজের লোক সনাতন আসলে মেয়েটাকে মেরে মাটিতে পুঁতে দিয়েছিল। কিন্তু এখন তো জেনে অবাক হলাম অরনীর বাবাই মেয়েটাকে আসলে মেরে ফেলেছিল। আর এই বিষয়টা সম্পর্কে দেখছি কেউই কিছু জানে না। যদিও তিনি ইচ্ছে করে মারতে চাইনি, কিন্তু তিনি নিজেই তো মেরে ফেলেছে। অবশ্য সনাতন সবকিছুই জানতো। কারণ অরনীর বাবা মেয়েটাকে মারলেও সনাতন নিজের হাতে মাটিতে পুঁতে দিয়েছিল। এটা ঠিকই বলেছেন পাপ করলে সেটা বহু বছর হলেও তার শাস্তি পেতেই হয়। আর এই ক্ষেত্রেও সেটাই হচ্ছে। আমার কাছে মনে হচ্ছে রূপকথাই সেই মেয়ে। নিশ্চয়ই সে জাতিস্মর হয়ে ফিরে এসেছে। পরবর্তী পর্বে নিশ্চয়ই এই বিষয়টা ক্লিয়ার হতে পারব।

 last year 

এই গল্পটা যখন পড়ছিলাম তখন ই ভাবছিলাম যে মরে যাওয়া মানুষ আসলে কিভাবে ফিরে আসে। যদিও এই বিষয়টা এখনো পর্যন্ত জানতে পারিনি। কিন্তু এই ওয়েব সিরিজের শুরু থেকেই যখন পড়েছিলাম মনে হয়েছিল সনাতন আসলে মেয়েটাকে মেরে ফেলে এসেছিল। কিন্তু এখন তো দেখছি সনাতন মারেন। অরনী্র বাবার আগের মাথায় মেয়েটাকে মেরে ফেলেছিল। কিন্তু এই বিষয়টা অন্য কেউ না জানলেও সনাতন জানে। কারণ এটা বুঝতে পেরেছি সনাতন মেয়েটাকে না মারলেও নিজের হাতে মাটিতে পুঁতে দিয়েছিল। কিন্তু আমি এই বিষয়টা কিছুতেই বুঝতে পারছি না মেয়েটা আবার কিভাবে ফিরে আসলো। তবে এটা আন্দাজ করতে পারছি যে রূপকথাই আসলে ওই মেয়েটা। নিশ্চয়ই পরবর্তী পর্বে এই বিষয়টা জানতে পারবো। তাই জন্য অপেক্ষায় রইলাম।