আবোল-তাবোল জীবনের গল্প [ স্বকীয়তার বিসর্জন ]
হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি ভালো আছেন। কারন ভালো থাকার যথেষ্ট কারণ আছে আর সেটা হলো শীতকালের পরিবেশ। হ্যা, খারাপ সময়গুলো সর্বদা মনে হয় দীর্ঘ আর ভালো সময়গুলো খুব দ্রুত ফুরিয়ে যায়। আসলে ভালো সময় মাত্র কিছু সময়ের জন্য থাকলেও সেটার প্রতি আকর্ষণ কিংবা প্রশান্তির অনুভূতি পুরো হৃদয়কে সতেজ করে দেয়, যার কারনে মানুষ দীর্ঘ রাত অপেক্ষা করে, রাতের কালো অন্ধকারকে সহ্য করে, মানুষ জানে রাতের আধার দূরিভূত করেই ভোরের সূর্য ঠিক নিজের মহিমা নিয়ে হাজির হবে। এটাই প্রকৃত সত্য, খারাপ সময় যতই দীর্ঘস্থায়ী হোক না কেন সেটা বিলীন হবে এবং মিলিয়ে যাবে, তারপর একটা সময় মানুষ সেটাও ভুলে যাবে। আসলে সুখের ছোয়া কিংবা ভালো সময়ের অনুভূতি আমাদের মাঝে নতুনভাবে অনুপ্রেরণা দেয় এবং আমাদের হৃদয়কে চঞ্চল করে তোলে। যার কারনে শত খারাপ মুহুর্তের মাঝেও আমরা ভালো সময়ের সেই চঞ্চলতার অনুভূতিকে স্মরণ করে সব কিছু সহ্য করে নেয়ার চেষ্টা করি।
তবে কি জানেন একটা বিষয় সব সময়ই স্মরণে থাকে, সেটা ভালো সময়ের সুন্দর অনুভূতি কিংবা খারাপ সময়র কষ্টের মুহুর্তগুলোও ভুলিয়ে দিতে হপারে না আর সেটা হলো খারাপ মুহুর্তে কাছের মানুষগুলো আচরণ। আমার কিছু মানুষকে ভালোবাসি, তাদেরকে আপন ভেবে খুব কাছে টেনে নেই এবং নানা বিষয়ে তাদের উপর নির্ভরশীল হওয়ার চেষ্টা করি। কারন তাদের সুন্দর ব্যবহার কিংবা ভালোবাসা আমাদেরকে মুগ্ধ করে তোলে এবং আমরা দিনশেষে তাদের উপর আস্থা রাখা চেষ্টা করি। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এটা সময় তাদের আসল চরিত্র ঠিক ফুটে উঠে এবং আমরা নিজেদের দুর্বলতা কিংবা ভুলের বিষয়টি নিদারুণভাবে বুঝতে সক্ষম হই।
সেই সময়ে কাছের মানুষগুলোর অনাকাংখিত এই ভিন্ন ধরনের আচরণ আমরা কখনো ভুলতে পারি না, বছরের পর বছর, যুগের পর যুগের সেগুলো ঠিক হৃদয়ের মাঝে ভেসে থাকে এবং সেই চরিত্রগুলোর কারনে ভিন্ন পরিস্থিতিতেও আমরা অন্যদের বিশ্বাস কিংবা তাদের উপর আস্থা রাখতে দ্বিধাবোধ করি। আমাদের সমাজে একটা কথা প্রচলিত রয়েছে, সেটা এই রকম যে, ভুলক্রমে দই ভেবে চুন খেয়ে মুখ পুড়ে গেড়ে। এখন দই কিংবা চুনের মতো কিছু দেখলেই ভয় লাগে, এই বুঝি আবার মুখ পুড়ে যাবে। ঠিক বাস্তব জীবনের বিষয়টিও অনেকটা সেই রকম, বিশ্বাস একবার চলে গেলে সেটাকে ফিরিয়ে আনা বেশ কষ্টকর হয়ে যায়। কাছের মানুষগুলোর ভিন্ন আচরণ দ্বিতীয় বার কাউকে কাছে টানতে অস্বীকৃতি জানায় হৃদয়, এটাই নির্মম বাস্তব।
যাইহোক, আমি বহু বার বলেছি আমি আমার মতো এবং নিজের বৈশিষ্ট্য নিজের মাঝে ধরে রাখার ব্যাপারে যথেষ্ট আন্তরিক। কিন্তু তবুও আমিতো মানুষ, রক্তে মাংসে মানুষ, তাই হয়তো মাঝে মাঝে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না এবং নিজের সীমানায় বন্দি থাকতে পারি না, কিছুটা সীমানা অতিক্রম করে ফেলি। সুতরাং অনাকাংখিতভাবে কিংবা অনভিপ্রেত কিছু করে ফেললে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। কিন্তু তাই বলে বাঙালির ঐহিত্য কিংবা স্বকিতয়া নষ্ট করার চেষ্টা করবেন না। আপনি নিঃসন্দেহে নিজের বৈশিষ্ট্যের বাহিরে গিয়ে কিছু করতে পারেন, তাতে কোন আপত্তি নেই কিন্তু এমন কিছু করবেন না যাতে পুরো বাঙালি জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার জন্য পুরো জাতিকে পস্তাতে হয়। তাহলে ইতিহাসের জঘন্য অধ্যায়ে ঠাঁই হবে আপনার ।
প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি জীবনের অংশ, কেউ হয়তো অল্প সুযোগেই নিজের বিজয় নিশ্চিত করতে পারে আবার কেউ হয়তো সারা জীবন চেষ্টা করেও কিছু করতে পারে না, এটাই বাস্তবতা আর এটা অস্বীকার করার কোন সুযোগ নেই। আপনি হয়তো ভিন্নভাবে চেষ্টা করেছেন যেটা মোটেও সঠিক ছিলো না, আপনি হয়তো নিজের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করে নাই যার কারনে লক্ষ্যে পৌছাতে ব্যর্থ হয়েছেন, তার দায়ভার কেন অন্যের ঘাড়ে ফেলতে চেষ্টা করবেন? নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করে নিন এবং নিজের প্রতিভার ব্যবহার নতুনভাবে পুনরায় ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। অনাকাংখিত এই রকম পরিস্থিতিতে নিজের স্বকিয়তা নষ্ট করবেন না, নিজের নোংরা মানসিকতার প্রকাশ করতে গিয়ে পুরো জাতিকে অপদস্ত করবেন না, এটা আমার অনুরোধ। যদিও আপনারা মানবেন কিনা সেটা আপনাদের ব্যাপার, কিন্তু আমি আমার কথাগুলো বলে দিলাম।
আমি হয়তো মানসিকভাবে কিছুটা অপ্রস্তুত হয়েছি, কথা কিংবা শব্দের ব্যবহার কিছুটা কষ্ট দিয়েছে কিন্তু কি জানেন তো? এটা প্রথম না। অজস্র মানুষের ভালোবাসা যেমন পেয়েছি ঠিক তেমনি অনাকাংখিতভাবে গুটি কয়েক নোংরা মানসিকতার মানুষের রাজনৈতিক ভাষণও শুনেছি, তাই এসব এখন আর গায়ে মাখি না কারন অভ্যেস হয়ে গেছে। কি করবো বলেন আপনাদের চরিত্র এবং ব্যবহার দিন দিন আমাদের অভ্যেসগুলোকে পরিবর্তন করে দিচ্ছে অনাকাংখিতভাবে। আমি আমার জায়গা হতে আমার মতোই থাকবো এবং নিজের অবস্থান হতে নিজেকে আগের মতোই গতিশীল রাখার চেষ্টা করবো। হয়তো একটা সময় শেষে মানুষের ভালোবাসা জীবনের গতিকে বৃদ্ধি করে দিবে কিন্তু আপনি, আপনার অবস্থান কোথায় হবে? সেটাও বিবেচনা করে নিন, ফলাফলটা একটু কল্পনা করে নিন, নিজের সহ্য ক্ষমতা ঠিক রাখতে পারবেন তো তখন?
Image Taken from Pixabay 1 and 2
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||




>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
| 250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness

OR




দই ভেবে চুন খেয়ে মুখ পুড়ে গেলে তখন দই দেখলেও ভয় লাগে এটাই বাস্তবতা। আসলে আমাদের বিশ্বাসগুলো যখন একবার ভেঙে যায় তখন সেই বিশ্বাসগুলো ফিরে পাওয়া সত্যি অনেক কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। তবুও তো বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে। কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতি সবকিছুকে এলোমেলো করে ফেলে। আমরা বাঙালিরা হয়তো নিজেকে শুধরানোর চেষ্টাই করি না। তাই তো নিজের দোষ অন্যের উপর দিতেই ব্যস্ত হয়ে পড়ি। তবে যাই বলুন না কেন ভাইয়া অনেক মানুষ যেমন আপনাকে ভালোবাসে তেমনি এমন কিছু মানুষ আছে যারা অন্যকে ছোট করতেই ব্যস্ত থাকে। তারা মানসিকভাবেই অসুস্থ। তাই তাদের কথায় কান না দিয়ে নিজের মতো করে ভালো থাকাই সবচেয়ে ভালো পদক্ষেপ। জানিনা জীবনের বাস্তবতায় আমরা আরো কত কিছুর সম্মুখীন হব।
এটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা।সবাই বিচার করতে বসে কে কত সময়ে সফল হলো,এই নিয়েই হিংসা।কেও এটা ভাবেনা যে অন্য কেও অল্প সময়ে বেশি কষ্ট করেই বিজয়ী হয়েছে।তাকে নিয়ে হিংসার কিছু নেই।আর কাছের মানুষদের কথা কি আর বলবো?কি আর বলার আছে?দিনশেষে এ বিশ্বাস করলেই ঠকতে হয়।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
সত্যি হাফিজ ভাই একদম ইউনিক কথা গুলো বলেছেন ৷ আসলে এটা সত্য জীবনে ভালো মন্দ সবকিছু ঘিরে ৷ তাই যতই খারাপ সময় আসুক ভালো সময় আসবে ৷ অপেক্ষা শুধু সময়ের ৷
গ্রামের কথাটা মারাত্মক ভাবে তুলে ধরেছেন ৷ দই ভেবে চুন মুখে দিলে তো মুখ পুড়ে যাবেই ৷ এখন আপনি বা আমি দেখতে বা বুঝতে না পারি তাহলে তো হবেই ৷
তবে যাই হোক এসব ঘটনা ঘটবে এটাই বাস্তব ৷ তাই বলে বিশ্বাস হারালে চলবে না ৷ কারন বিশ্বাস আছে বলেই এতো সুন্দর একটি পৃথিবী টিকে আছে ৷
সত্যি বলতে মানুষের জীবনে খারাপ সময় এবং ভালো সময় এই দুটোই আসবে। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় যে খারাপ সময়টা আমাদের জীবনে অল্প সময়ের জন্য এলেও এই সময়টা আমাদেরকে অনেক ভোগান্তির সম্মুখীন করে তোলে। আর এই সময়ের কথা আমাদের অনেক দিন পর্যন্ত মনে থাকে তবে খারাপ সময় আসার পরে যখন ভালো সময়টা আসে তখন আস্তে আস্তে সেই খারাপ সময়টার কথা মনে থাকে না। তবে আমরা যাদের কারণে এই খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাই তাদের হয়তোবা আমরা ভুলে যাই কিন্তু কোন একটা সময়ে গিয়ে দীর্ঘনিঃশ্বাস ছেড়ে বলতে হয় তার সঙ্গে পরিচয়টা না হলেই হয়তো ভালো হতো। আসলে পৃথিবী সূচনা লগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত ভালবাসার পাশাপাশি মানুষের নিন্দুকের অভাব হয়নি, নিন্দুকরা সবসময়ই পিছনের নিন্দা করবে এটাই স্বাভাবিক।
আসলে মানুষের জীবনে ভালো-মন্দ দুইই আসে। কিন্তু এই ভালো সময় গুলো যেমন আমাদের সুখ তার স্বাচ্ছন্দ্য দেয়, শান্তির ঘুম দেয়, আর এই খারাপ সময় গুলোই আমাদের কিছু মুখোশধারী মানুষকে চেনাতে সাহায্য করে। যারা ভালো সময়ে একরকম সবথেকে কাছের, সবথেকে প্রিয় আর সবচেয়ে বড় হিতাকাঙ্খির অভিনয় করে।খারাপ সময়ে তাদের হিংস্র মুখগুলো এমন ভাবেই সামনে চলে আসে যে অনেকেই আমরা নিতে পারি না। নিজের ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে আজ এই কথাগুলো আপনার সবটাই ঠিক মনে হচ্ছ।যদি আপনি সব সময় ঠিকই বলেন। আর সমস্ত কথা জীবনের কথা থাকে।আমার জীবনে সবার মতই ভালো-মন্দ মিলিয়ে আছে। অনেক বন্ধু এবং আত্মীয় কে দেখেছি পাল্টে যেতে। ভালো সময় যখন আসবে এরা হয়তো আবার ভালোর মুখোশ পরে নেবে। কিন্তু আমি আর চিনতে ভুল করব না।
আপনি ঠিক বলেছেন ভালো সময় মনে হয় যে খুব তাড়াতাড়ি চলে গেল। অন্যদিকে খারাপ সময় গুলো মনে হয় যেতে চাই না। যাই হোক আসলেই একজনের কাছে বিশ্বাস ভেঙ্গে গেলে,আর অন্য কারোকে বিশ্বাস করতে ইচ্ছা করে না। সেই বিশ্বাসটা আবার ফিরিয়ে আনতে আমাদের অনেক কষ্টকর হয়ে যায়। আপনার কথাগুল বাস্তবের সাথে মিলে যায় আসলে এরকমই হয়ে থাকে। ধন্যবাদ।
ভাইয়া আবোল-তাবোল জীবনের গল্প বলতে গিয়ে অনেক গুরুত্ব পূর্ণ কথা সেয়ার করেছেন। কার ভিতরে কি আছে সেটা তো বলা যায় না। কারন কেউ তো মানুষের ভিতরে গিয়ে দেখতে পারে না। জীবনে কাউকে না কাউকে তো বিশ্বাস করতে হবে। আর সে যদি পিছন থেকে ছুরি মারে কি আর করার আছে। যায়হোক ঐদিন যে ঘটনাটা ঘটেছে আশা করি এমন ঘটনা আর হবে না। ধন্যবাদ ভাইয়া।
Congratulations, your post has been upvoted by @dsc-r2cornell, which is the curating account for @R2cornell's Discord Community.